বিশুদ্ধ দ্বীন শেখার জন্য উপযুক্ত গ্রন্থাদি

বিশুদ্ধ দ্বীন শেখার জন্য উপযুক্ত গ্রন্থাদি Al Ilm Academy Al-Ilm Academy

উস্তায আব্দুল হাকীম মাদানী

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। যে ব্যক্তি বিশুদ্ধভাবে দ্বীন শিখতে চায় তাঁর জন্য উত্তম গ্রন্থাবলী। যথা-

🖊শায়খ মুহাম্মদ ইবনু আব্দিল ওয়াহহাহ রাহিমাহুল্লাহ রচিত-
▪কিতাবুত তাওহীদ [আল্লাযী হুয়া হাক্কুল্লাহি ‘আলাল ‘আবীদ]-
-সংক্ষিপ্ত পরিচিতি: আক্বীদা সংক্রান্ত এক আশ্চর্য ও অভূতপূর্ব সংকলন বলা যায় বইটিকে। এর আলোচনার ধারাবাহিকতা এবং বিশ্লেষণ খুব সহজেই বোধগম্য। মহান আল্লাহর অশেষ অনুগ্রহে বইটির কবুলিয়াত অনেক উঁচু পর্যায়ে। বইটিতে মোট ৬৭টি অধ্যায় রয়েছে। লেখক কোনরূপ ভূমিকা ছাড়াই মূল আলোচনা শুরু করেছেন। বইটি চার ভাগে বিভক্ত যথা:
ক. তাওহীদ সংক্রান্ত আলোচনা ও এর শাখা প্রশাখা।
খ. তাওহীদপন্থীদের বৈপরীত্য বিষয়াবলী।
গ. পরিপূর্ণ তাওহীদের ক্ষেত্রে বৈপরীত্য বিষয়াবলী।
ঘ. তাওহীদের পরিপূর্ণ প্রতিদান অর্জনের ক্ষেত্রে বৈপরীত্য বিষয়াবলী।
একজন মুসলিমের বৈষয়িক জীবনে তাওহীদের উল্লেখযোগ্য বিষয়াবলী লেখক এতে উল্লেখ করেছেন। তিনি প্রত্যেক অধ্যায়ের শুরুতে আল কুরআনের আয়াত অতঃপর তদ্বসংক্রান্ত হাদীস এনেছেন। কখনো আয়াত দ্বারাই অধ্যায়ের শিরোনাম উল্লেখ করেছেন। সবশেষে আয়াত ও হাদীস থেকে প্রাপ্ত মাসআলা গুলো ক্রমানুসারে উল্লেখ করেছেন। যা সহজেই পাঠকের বোধগম্য হয়। বইটির অনেক ব্যাখ্যাগ্রন্থ রয়েছে, তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
ক. তাইসীরুল আযীযিল হামীদ শারহু কিতাবিত তাওহীদ: সুলাইমান ইবনু আব্দুল্লাহ আলুশ শায়খ [মুহাম্মদ ইবনু আব্দিল ওয়াহহাহ এর নাতী]।
খ. ফাতহুল মাজীদ শারহু কিতাবিত তাওহীদ: আব্দুর রহমান ইবনু হাসান আলে শায়খ।
গ. আল ক্বওলুস সাদীদ ফি মাক্বাসিদিত তাওহীদ: আব্দুর রহমান ইবনু নাসির সা’দী।
ঘ. আত তা’লীকুল মুফীদ ‘আলা কিতাবিত তাওহীদ: শায়খ আব্দুল আযীয বিন বায।
ঙ. আল ক্বওলুল মুফীদ আলা কিতাবিত তাওহীদ: শায়খ ছালিহ আল ঊসাইমীন।
চ. ই’আনাতুল মুসতাফীদ: শায়খ ছালিহ আল ফাওযান।
ছ. আত তাকসীমু ওয়াত তাকঈদু লিল ক্বওলিল মুফীদ: হায়ছাম মুহাম্মদ সারহান।

▪কাশফুশ শুবহাত-
বইটিতে মোট ১৭ টি অধ্যায় রয়েছে। এতে লেখক মুশরিকদের বিভিন্ন ধরনের সংশয়- সন্দেহ উল্লেখ করে তা খন্ডনের মাধ্যমে বাতিল সাব্যস্ত করেছেন। বান্দাদের উপর মহান আল্লাহর হক্ব [অধিকার] তথা তাওহীদুল ইবাদাহ এর বর্ণনা বিস্তারিতভাবে আলোকপাত করেছেন এবং তাওহীদুর রুবূবিয়াহ ও তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ মাঝে পার্থক্য নির্ণয় করেছেন।

▪আল উসূলুছ ছালাছাহ-
আমরা জানি যে, উসূলুছ ছালাছাহ হলো ইসলামের তিনটি মূলনীতি। যথা:
ক. মহান আল্লাহর বিষয়ে জ্ঞান।
খ. ইসলাম তথা এর প্রমাণাদির জ্ঞান।
গ. নবীদের সম্পর্কে জ্ঞান।
লেখক আলোচ্য বইয়ে এই মূলনীতিগুলো তদ্বসংশ্লিষ্ট আলোচনাসহ উল্লেখ করেছেন।

▪আল ক্বাওয়াঈদুল আরবা’আহ-
এটি একটি সংক্ষিপ্ত পত্র বিশেষ; যা শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু আব্দিল ওয়াহহাব রাহিমাহুল্লাহ লিখেছিলেন। এখানে তাওহীদ ও শিরকের গুরুত্বপূর্ণ চারটি নীতিমালা স্থান পেয়েছে। আর মুশরিকদের দ্বারা দাবী করা শাফা’আত ও তাওহীদপন্থীদের সাব্যস্ত করা শাফা’আতের মধ্যকার পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছে।

🖊শায়খ ছালিহ আল ফাওযান হাফিজাহুল্লাহ রচিত-

▪আক্বীদাতুত তাওহীদ [ওয়া বায়ানু মা য়ুযাদ্দুহা আও য়ুনকিসুহা মিনাশ শিরকিল আকবারি ওয়াল আসগারি ওয়াত তা’তীলি ওয়াল বিদাঈ ওয়া গায়রি যালিক]-
-সংক্ষিপ্ত পরিচিতি: এতে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাত এর আক্বীদা ও ভ্রান্ত আক্বীদা, শিরকে আকবার ও আসগার, বিদ’আত ও তা’তীল সম্পর্কে সংক্ষিপ্তাকারে আলোচনা রয়েছে। লেখক আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা’আত এর সম্মানিত ইমামদের গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ থেকে সংকলন করে বইটি লিখছেন। বিশেষ করে ইবনু তাইমিয়্যাহ, ইবনুল ক্বাইয়িম ও মুহাম্মদ ইবনু আব্দিল ওয়াহহাহ [রাহিমাহুমুল্লাহ] এই তিনজনের গ্রন্থ সহায়তা অধিকহারে গ্রহণ করেছেন। বইটিতে মোট ছয়টি অধ্যায় রয়েছে। যথা:
ক. আক্বীদার উৎপত্তি ও সূচনা সংক্রান্ত তথ্য এবং আক্বীদা সংক্রান্ত গ্রন্থ পরিচিতি।
খ. তাওহীদের পরিচয় ও প্রকারভেদ।
গ. শিরকের পরিচয় ও মানুষের জীবনে এর প্রাদূর্ভাব।
ঘ. তাওহীদের সাথে বৈপরীত্য ও সাংঘর্ষিক কথা ও কার্যাবলী এবং যে সকল কারণে একজন মুসলিমের তাওহীদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ঙ. রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম], আহলে বায়ত ও তাঁর সম্মানিত সাহাবীগণ সম্পর্কে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা’আত এর আক্বীদা যেমন হওয়া উচিত।
চ. তাওহীদের ক্ষেত্রে বিদ’আত এর পরিচয়।

▪আল মুলাখখাস আল ফিক্বহী [দুই খণ্ড]:
-সংক্ষিপ্ত পরিচিতি: বইটি শায়খ মানসূর ইবনু ইউনুস আল বুহূতী রাহিমাহুল্লাহ এর ‘আর রওযুল মুরবি’ শারহু যাদিল মুসতাক্বনি’ গ্রন্থের সংক্ষিপ্তরূপ। বইটির টিকা লিখছেন শায়খ আব্দুর রহমান ইবনু মুহাম্মদ ইবনু ক্বাসিম। বইটিতে ফিক্বহী মাসআলা মাসায়েল এর বিষয়াবলী সংক্ষিপ্তকারে দলীল আদিল্যাসহ সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন লেখক। বইটিতে আলোচিত অধ্যায় গুলো নিম্নে দেওয়া হলো: [প্রথম খন্ডের] শুরুতে দ্বীনের ব্যুৎপত্তি ইলমের ফযীলত সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এরপর ধারাবাহিকভাবে ফিক্বহী ক্রমধারা অনুসারে ‘তহারাত, ছালাত, যাকাত, সিয়াম, হজ্ব, জিহাদ এবং [দ্বিতীয় খণ্ডে] বুয়ূ’ শারিকাত, মুসাকাহ- মুযারাআহ- ইজারাহ, মাওয়ারীছ, নিকাহ, ত্বলাক্ব, হুদূদ, আত্বঈমাহ, আয়মান- নুযূর, ক্বযা’ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

🖊ইমা নাবাবী রাহিমাহুল্লাহ রচিত-
▪রিয়াযুস সালেহীন মিন কালামি সায়্যিদিল মুরসালিন:
-সংক্ষিপ্ত পরিচিতি: খুব সুন্দরভাবে সাজানো হাদীসের সংকলিত গ্রন্থটিতে একজন মুসলিমের ইবাদত থেকে শুরু করে দৈনন্দিন জীবন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় হাদীস স্থান পেয়েছে। স্বল্প সংখ্যক হাদীস ব্যতীত এর প্রায় সকল হাদীস সহীহ। আল কুরআনের সাথে হাদীসের যে গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান তা বুঝানোর জন্য তিনি অধ্যায় ও অনুচ্ছেদের প্রথমেই বিষয়/ শিরোনামের সাথে সম্পর্কিত আল কুরআনের আয়াত সংযুক্ত করেছেন। সাথে সাথে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কিছু বিষয়ের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণও প্রদান করেছেন। এতে মোট ১৯ টি অধ্যায় রয়েছে। যার হাদীস সংখ্যা: ১৮৯৬ টি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *